জানা অজানা অনেক গল্প

 



ইউনিভার্সিটির হলের ছেলেগুলোকে কখনো বাবা কী করে জিজ্ঞেস করতে নেই, সবচেয়ে কাছের বন্ধুটাকেও না।


শেষবার আমি যখন একজন কে জিজ্ঞেস করেছিলাম সে অনেকক্ষন মাথা নিচু করে চুপ করে ছিলো,

তারপর বলল, “বাবা কিছু করে না”।পরে জানতে পেরেছিলাম তার বাবা অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালায়। 

সে সম্ভবত এটা স্বীকার করতে ল*জ্জা পাচ্ছিলো।


কিছুদিন আগে হলের সামনের মাঠে খালি জায়গাটাতে দাঁড়িয়ে, আকাশের দিকে তাকিয়ে,

যখন একটু আনমনে হয়ে যাই, ঠিক তখন বাতাসে কোন এক বালকের কাঁদো কাঁদো গলা ভেসে আসে,

"ফরম ফিল-আপ এর জন্য ১৭০০টা টাকা লাগবে বাবা, এ মাসে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারবো না..

ওপাশ থেকে কি বলা হয় শোনা যায়না, তবে বোঝা যায়, বাবা আর ছেলের মাঝে এব্যাপারে অনেকক্ষণ তর্ক হয়।


ক্ষুধার্ত মা, ছোট-ভাইবোন গুলোকে বুঝ দেয়, “ভাইয়া টাকা পাঠালে................”


ছেলেটা তার স্বপ্ন বাদ দিয়ে অন্যেদের স্বপ্ন পূরণে লেগে যায়। এত কিছুর পরও ছেলেগুলো চা-দোকানে চা শেষ করে সবার আগে বিল দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসে,

আড্ডাশেষে কাছের বন্ধুটাকে বিদায় দেয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে, জীবনের প্রথম আয়ের টাকা দিয়ে মা’র জন্য শাড়ী কিনে আনে, অসুস্থ বাবা-টার জন্য টিউশনের টাকা থেকে ওষুধ কিনে পাঠায়। 


কাছের এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, টিউশনি থেকে এতো টাকা পাস,  কি করিস? 

এই প্রশ্ন তাকে প্রায় হাজার বারের মতো করেছিলাম।   কিছুদিন আগেই এমন সব উত্তর পেয়েছিলাম,  যা আমাকে হতবাক করেছিল। তাকে বুকে জরিয়ে ধরেছিলাম। 


কেন জানেন,  পারিবারিক কারণে তাকে সহ তার মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তার বাবা। 


বাবা নামক ছায়া তার মাথার উপর নেই। 

তার বাবা থাকতেই নেই। পুরো পরিবারের দায়িত্ব তার কাধে। শুধু টিউশনির টাকায় তার পুরো পরিবারের খরচ সহ তার খরচ চালাতে হয়। 


এই বন্ধুকেই আমরা বলি খুবই বাস্তবিক। 

মেস ছেড়ে যাওয়ার সময় সে আমাদের কাছে ৩০ টাকার সাবান আর গাঁ ঘষার টাকা ফেরত চেয়েছিল। তখন বুঝতে পারিনি। কিন্তু আজ বুঝি কেন চেয়েছিল। 


এক আপুর কথা জানি। বাবা অন্য মহিলাকে বিয়ে করে তাদেরকে আলাদা করে দিয়েছে। 

আপু নিজেই তার পুরো পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছে। বাবা খোঁজ পর্যন্ত নেয়না। 


এসব ছেলে মেয়েরাই সফল হবে একদিন। 

ইনশাল্লাহ। 


(সংগৃহীত)